গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ঐক্যবদ্ধ ও আপসহীনভাবে রাজপথে
থাকতে হবে। আরেকবার চ্যালেঞ্জ নিয়ে অগ্রসর হতে হবে। ১৬ আনা নির্ভেজাল
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
নিজের দল গণফোরামের ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ শনিবার রাজধানীর
মহানগর নাট্যমঞ্চে আয়োজিত আলোচনা সভায় ড. কামাল হোসেন এসব কথা বলেন। তিনি
গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় গণতন্ত্রকামী সব দলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান
জানান। বিভিন্ন দলের নেতারাও ‘গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে’ বৃহত্তর ঐক্য ও
আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে ড.কামাল হোসেন বলেন, দেশ যেভাবে চলছে, এভাবে চলতে
থাকলে মহাসংকট তৈরি হবে। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে পারেনি
উল্লেখ করে তিনি বলেন, মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে মানুষকে বোঝানো ভাঁওতা দেওয়ার
শামিল। সংবিধানের প্রতিশ্রুতি, জনগণ ক্ষমতার মালিক। প্রকৃত নির্বাচন হলে
মানুষ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করবে। সারা দেশের মানুষ সেই অধিকার থেকে
বঞ্চিত। দেশ বাঁচানোর জন্য দল–মতনির্বিশেষ সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। অবাধ
নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে হবে। সেই নির্বাচনে যাঁরা জনগণের প্রতিনিধি
নির্বাচিত হবেন, তাঁরা দেশ শাসন করবেন।
ড. কামাল বলেন, মানুষ উন্নয়ন চায়, কতিপয় মানুষের স্বার্থে উন্নয়ন নয় বা কয়েকটি পরিবারের উন্নয়ন নয়।
এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে সূচনা বক্তব্যে ড. কামাল বলেন, তরুণসমাজ
ন্যায়, সুশাসন, গণতন্ত্র ও সংবিধানের মূলনীতির পক্ষে। মানুষের ক্ষমতায়ন
করতে হবে। জনগণ ক্ষমতার মালিক, এটা মেনে ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বপ্নের বাংলাদেশ
গড়তে হবে।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী আগামী সপ্তাহ থেকে
ড. কামাল হোসেনকে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ড.
কামালের প্রতি তাঁর একটাই আবেদন, ড. কামাল যেন তাঁর অসম্পন্ন কাজ সম্পন্ন
করেন। ফলাফল কী হবে তা জনগণ দেখবে। মাঠে থাকলে পরিবর্তন আসবে। পুলিশের ভয়ে
লুকিয়ে থেকে মৃত্যুবরণ করলে লাভ হবে না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, রাজপথে রক্ত দিয়ে
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে। সব গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে
আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আগের রাতে ভোট
ডাকাতি হয়—পৃথিবীর কোনো দেশে এমন নজির নেই, বাংলাদেশে হয়েছে। কীভাবে এ
সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরানো যাবে, সেটা এখন প্রশ্ন। সবাই মিলে লড়াই করতে
পারলে দেশ বাঁচবে, মানুষ বাঁচবে। কিন্তু ঐক্য বিস্তৃত করতে গিয়ে যেন ফাটল
আরও বড় না হয়ে যায়, সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে ডাকসুর সহসভাপতি নুরুল হক বলেন, দেশের বৃহত্তর স্বার্থে সবাইকে একসঙ্গে কথা বলতে হবে।
আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, গণসংহতি
আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকী, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ
সম্পাদক সাইফুল হক, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ
সম্পাদক রেজা কিবরিয়া প্রমুখ বক্তব্য দেন।