অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল শিশু-কিশোরদের উদ্দেশ্যে নিজের জীবনী
তুলে ধরে বলেছেন, আমাদের অর্জন ধরে রাখতে তরুণ সমাজকে মন দিয়ে লেখাপড়া করতে
হবে। তোমরা আমাকে অনুসরণ করতে পারো। আমার জীবনের গল্প তোমাদের কাছে
অবিশ্বাস্য মনে হবে। বেতন না দিতে পারায় স্কুলে তিন বার আমার নাম কাটা
গেছে। গ্রামের মানুষ আমার বেতন দিয়েছেন। এসএসসি ফর্ম ফিলাপের টাকা ছিল না,
শেষ দিন আমার এলাকার একজন আমাকে টাকা দেন। আমি লজিংয়ে থেকে লেখাপড়া করেছি,
টিউশনি করিয়েছি। টিউশনি করে ও লজিংয়ে থেকে লেখাপড়া করে আমি যদি অর্থমন্ত্রী
হতে পারি, তোমরা কেন পারবে না। তোমরা আরও বড় বড় দায়িত্ব পালন করতে পারবে।
আমরা দেশকে যেখানে রেখে যাব তোমরা সেখান থেকে শুরু করবে, এগিয়ে নিয়ে যাবে।
তোমরাই দেশের ভবিষ্যৎ। উন্নয়নের রেলগাড়ি লাইনে চলছে তোমরাই তা অব্যাহত
রাখবে। তোমরা জাতির জনকের স্বপ্ন, শেখ হাসিনার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করবে।
গতকাল রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার
৭৩তম জন্মদিন উপলক্ষে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্রীড়া সামগ্রী,
শিক্ষা উপকরণ বিতরণ অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন। শেখ রাসেল জাতীয়
শিশু-কিশোর পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মো. রকিবুর রহমানের সভাপতিত্বে এ
সময় উপস্থিত ছিলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, মাহমুদ-উস-সামাদ
চৌধুরী এমপি, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও জনতা ব্যাংকের
চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ। অর্থমন্ত্রী বলেন, জননেত্রী থেকে
এখন বিশ্বনেত্রীতে পরিণত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর নেতৃত্বে
অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় ২০৪১ সালে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার পথে এগিয়ে চলছে
বাংলাদেশ। বাংলাদেশের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান তুলে ধরে
অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ এশিয়ার সীমানা পেরিয়ে দেশরত্ন শেখ
হাসিনা এখন বিশ্ব রাজনীতিতে একজন প্রশংসনীয় এবং অনুকরণীয় রাষ্ট্রনায়ক।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘চ্যাম্পিয়ন অব স্কিল ডেভেলপমেন্ট ফর ইয়ুথ
অ্যাওয়ার্ড’ দিয়েছে ইউনিসেফ। তরুণদের দক্ষতা উন্নয়নে অসামান্য অবদানের
স্বীকৃতি হিসেবে এ পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের
জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। জাতির জনকের স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী আমাদের
অর্থনৈতিক মুক্তি দেওয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁর কারণে বাংলাদেশ
পৃথিবীর বুকে স্বকীয় বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। এখন তিনি বিশ্ব নেতা।
যুক্তরাষ্ট্রের ডোনাল্ড ট্রাম্প, ভারতের নরেন্দ্র মোদি ও জাপানের
প্রধানমন্ত্রী সিনজো অ্যাবেকে যেভাবে মূল্যায়ন করা হয়, প্রধানমন্ত্রীকেও
একইভাবে মূল্যায়ন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী দেশে না আসলে আমরা হারিয়ে যেতাম,
এই দেশের মানুষ হারিয়ে যেত।
দেশের উন্নয়নচিত্র তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে
২০২৭ সালে বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে ২৬তম অর্থনীতির দেশ হবে। ২০৩০ সালে
প্রত্যেক পরিবারে একজন করে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা, দারিদ্র্য শূন্যের
কোটায় নেমে আসার ক্ষেত্রে আমরা দৃঢ় আশাবাদী। এ সময় মালয়েশিয়া-অস্ট্রেলিয়া ও
নিউজিল্যান্ডকে পেছনে ফেলে সামনে এগিয়ে যাবে। আশা করা যায়, ২০৩০ সালে
বাংলাদেশে দরিদ্র মানুষ খুঁজে পাবেন না। বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ এখন অনেক দেশের
সামনে বাংলাদেশকে উদাহরণ হিসেবে অনুসরণ করার জন্য উপস্থাপন করছে। দক্ষিণ
এশিয়ায় প্রবৃদ্ধি অর্জনে বাংলাদেশ এক নম্বর। ২০৪১ সালে ২০টি প্রথম শ্রেণির
দেশের কাতারে থাকবে বাংলাদেশ।