পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, আজ সকালে সড়কের ওপর বিপুল পরিমাণ কুচি কুচি টাকা দেখে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয়রা। খবর শুনে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পাশের ডোবায় টাকার টুকরো ভাসছিল। এটা দেখে স্থানীয় লোকজনকে সেখানে নামিয়ে দেওয়া হয়। তখন সেখানে অসংখ্য টাকার কুচি পাওয়া যায়। ওই ডোবা থেকে কয়েক বস্তা টুকরো টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর দুই বস্তা আলামত হিসেবে পুলিশ এবং এক বস্তা র্যাব নিয়ে গেছে।
ওই ডোবায় ছেঁড়া টাকা তোলার কাজে ব্যস্ত শাহজাহান মণ্ডল বলেন, ২২ সেপ্টেম্বর রোববার সকালে স্থানীয় দুজন নারী বস্তায় করে টুকরো টাকা এখান থেকে সংগ্রহ করে পাশের গ্রামে নিজেদের বাড়িতে নিয়ে যান। জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করাই ছিল তাঁদের উদ্দেশ্য। এটা শোনার পর তিনিসহ বেশ কয়েকজন এখানে এসে দেখেন, ঘটনা সত্য। তবে বিষয়টি আজ পুলিশকে জানানো হয়।
ট্রাক থেকে টাকা ফেলার ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী জালশুকা উত্তরপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র জাহিদ মিয়া বলে, ২১ সেপ্টেম্বর শনিবার রাতে সে মাছ ধরতে যাচ্ছিল। তখন সে দেখতে পায়, হলুদ রঙের একটি ট্রাক থেকে টাকা ফেলে দেওয়া হচ্ছে। সে তখন চালকের কাছে জানতে চায়, এত টাকা কোথা থেকে এল। চালক তখন তাকে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেন। মাছ ধরে ভোরের দিকে ফেরার সময় সে দেখে, দুজন রাস্তা থেকে বস্তায় করে টাকা নিয়ে যাচ্ছেন।
শাজাহানপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয়দের কাছ থেকে ঘটনার খবর পাওয়ার পরপরই পুলিশ এখানে আসে। এখনো উদ্ধার তৎপরতা চলছে।
পরে জানা গেলো
বগুড়ার শাহজাহানপুরের একটি বিলে তিন ট্রাক ছেড়া টাকা পাওয়া গেছে। এ নিয়ে এলাকায় হুলস্থুল পড়ে গেছে। আজ বেলা ১১টার দিকে স্থানীয়রা বিপুল পরিমাণ এসব টাকার ভগ্নাংশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকে জমাকৃত ডাস্ট (ছেড়া) টাকা।জানা যায়, আজ বেলা ১১টার দিকে তিনটি ট্রাকে করে শাহজাহানপুর উপজেলার চান্দায় বিলের ধারে বিপুল পরিমাণ ছেড়া এই টাকা দেখতে পায়। মূহুর্তেই এ খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে পুরো এলাকায় হুলস্থল পড়ে যায়। পরে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়।
খবর পেয়ে পুলিশ, সাংবাদিকসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তারা বাংলাদেশে ব্যাংকের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হন যে, এগুলো ডাস্ট টাকা (ছেড়াসহ বিভিন্ন কারণে বাতিল)। পৌরসভার মাধ্যমে টাকাগুলো পরিত্যক্ত স্থানে ফেলে দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বগুড়া শাখার নির্বাহী পরিচালক জগন্নাথ ঘোষ বাতিল টাকা ফেলে দেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, এ ব্যাপারে আগেই পৌরসভাকে চিঠি দেয়া হয়। পৌরসভার মেয়রও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ছেড়া টাকাগুলোর মধ্যে ১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটের সংখ্যা বেশি।