আটক হওয়া ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী ওরফে
সম্রাটকে নিয়ে তাঁর কাকরাইলের কার্যালয় ভূঁইয়া ট্রেড সেন্টারে অভিযান
চালিয়ে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ, ইয়াবা, বিদেশি পিস্তল, গুলি ও ক্যাঙারুর
চামড়া উদ্ধার করে র্যাব।
দুপুর সোয়া একটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত ওই কার্যালয়ে অভিযান চালায়
র্যাব। একই সময় সম্রাটের ভাইয়ের শান্তিনগরের বাসা ও সম্রাটের মহাখালীর
বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। তবে সেখান কী পাওয়া গেছে তা জানায়নি র্যাব।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর এই ভূঁইয়া ট্রেড
সেন্টারে অবস্থান করেছিলেন সম্রাট। পরে তিনি অন্য জায়গায় চলে যান।
র্যাবের ডিজি বেনজীব আহমেদ বলেছেন, অভিযান শুরুর ২ দিনের মাথায় সম্রাট
ঢাকা ত্যাগ করেন। আজ কুমিল্লা থেকে সম্রাটকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব জানিয়েছে সম্রাটের কার্যালয় থেকে ১ হাজার ১৬০টি ইয়াবা, বিপুল
পরিমাণ বিদেশি মদ, একটি পিস্তল ও ছয় রাউন্ড গুলি ও দুটি ক্যাঙারুর চামড়া
উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
ক্যাঙারুর চামড়া পাওয়ায় বন্য প্রাণী আইনে মামলা হতে পারে। এই আইনে
ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে সাজা দেওয়ার বিধান রয়েছে।
আজ ভোরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে সম্রাট ও যুবলীগের আরেক নেতা এনামুল
হক আরমানকে আটক করে র্যাব। সেখান থেকে তাঁদের দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর
উত্তরায় র্যাব সদর দপ্তরে নেওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁদের নিয়ে অভিযানে
বের হয় র্যাব।
বেলা সোয়া একটার দিকে সম্রাটকে তাঁর কাকরাইলের কার্যালয়ে নেওয়া হয়। গত মাসের মাঝামাঝি ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে
টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগের কারণে যুবলীগ নেতা সম্রাটের নাম
আলোচনায় আসে। অভিযানে যুবলীগ, কৃষক লীগ ও আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা
র্যাব-পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। কিন্তু সম্রাট ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।
অভিযান
শুরুর প্রথম তিন দিন সম্রাট দৃশ্যমান ছিলেন। তিনি ফোনও ধরতেন। সে সময় ছয়
দিন তিনি কাকরাইলে তাঁর ব্যক্তিগত কার্যালয়ে অবস্থান করেন। ব্যক্তিগত
কার্যালয়ে সম্রাটের অবস্থানকালে শতাধিক যুবক তাঁকে পাহারা দিয়ে রেখেছিলেন।
সেখানেই সবার খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। পর অন্য স্থানে চলে যান
সম্রাট। এরপর তাঁর অবস্থান নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়।
সম্রাটের
পরিবারের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা যায়, গত ২ বছর ধরে ঢাকার মহাখালীতে দ্বিতীয়
স্ত্রীর বাসায় যেতেন না সম্রাট। তিনি কাকরাইলে ভূঁইয়া ট্রেড সেন্টারে নিজ
কার্যালয়ে থাকতেন।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার ক্লাবগুলোতে ক্যাসিনো
বিরোধী অভিযান শুরু করে র্যাব। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন
যুবলীগের নেতারাই মূলত এই ক্যাসিনো ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন বলে অভিযোগ
রয়েছে। প্রথম দিন ফকিরাপুলের ইয়ংমেনস ক্লাবে অভিযান চালায় র্যাব।
এরপরই গুলশান থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের
সাংগঠনিক সম্পাদক ও ক্লাবটির সভাপতি খালেদ হোসেন ভূঁইয়াকে। তবে আইনশৃঙ্খলা
রক্ষাকারী বাহিনী ও রাজনৈতিক অঙ্গনের লোকেরা মনে করেন, ঢাকায় ক্যাসিনো
ব্যবসার অন্যতম নিয়ন্ত্রক সম্রাট।