আমদানি করা তরল পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) ভারতের ত্রিপুরায় রপ্তানির
মাধ্যমে দেশের স্বার্থ বিক্রির অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
বলেন, বাংলাদেশের স্বার্থ শেখ হাসিনা বিক্রি করবে সেটি হতে পারে না। যুক্তি
তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশ এলপিজি রপ্তানি করবে, প্রাকৃতিক গ্যাস নয়। এ
নিয়ে ভুল বোঝাবুঝিরও কোনো অবকাশ নেই। শেখ হাসিনা বলেন, আমরা বিদেশ থেকে
এলপিজি এনে প্রক্রিয়াজাত করে ভারতে রপ্তানি করব। এটা প্রাকৃতিক গ্যাস নয়।
দেশে প্রাকৃতিক গ্যাসের প্রকৃত মজুদ কত, তা না জেনে রপ্তানি করার কোনো
সিদ্ধান্ত নেয়া হবে না বলেও তিনি আশ্বস্থ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এলপিজি
বাংলাদেশে উৎপাদিত হয় না, বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। গ্যাস উত্তোলনের সময়
বাই প্রডাক্ট হিসেবে এলপিজি পাওয়া যায়। ত্রিপুরায় যে গ্যাসটা দিচ্ছি তা
আমদানি করা এলপিজি, বটল গ্যাস। অন্য পণ্য যেমন আমরা রপ্তানি করি, ঠিক তেমন।
এটা নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির কিছু নেই। গ্যাস রপ্তানির মাধ্যমে আমাদের
রপ্তানিখাতে আরেকটি মাত্রা যোগ হলো। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা এর বিরোধিতায়
সোচ্চার, মানে বিএনপি, ২০০১ সালের কথা মনে করিয়ে দিতে চাই। আমেরিকা গ্যাস
বিক্রির জন্য বলেছিল, আমি বলেছিলাম দেশের চাহিদা মিটিয়ে আমরা তারপর বিক্রি
করব। যে কারণে ২০০১ সালে আমরা ক্ষমতায় আসতে পারিনি। আর যারা গ্যাস বিক্রি
করে দিচ্ছে বলছে, তারাই গ্যাস দেবে বলে মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিমি কার্টারের বাসায় আমরা বসেছিলাম।
তাদের
মাঝে চুক্তি হয়েছিল। বিল ক্লিনটন এসেছিলেন, তিনিও আমাকে গ্যাস বিক্রির
প্রস্তাব দিয়েছিলেন। আমাকে আমেরিকায় দাওয়াত দিয়ে নিয়ে যাওয়া হলো। সেখানেও
আমি একই কথা বলেছিলাম। আমি তখন বলেছিলাম বিএনপি গ্যাস দিতে পারবে না। কারণ
আমাদের অত গ্যাস ছিল না। তারা সার্ভে করার জন্য লোক পাঠাল। বলল, বাংলাদেশ
গ্যাসে ভাসছে। যখন ভালো করে তাদের কাছে জানতে চাইলাম তখন তারা সঠিব জবাব
দিতে পারেনি। শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭১ সালের কথা যারা মনে রাখবেন আমাদের মহান
মুক্তিযুদ্ধে ত্রিপুরা আমাদের একটা ঘাঁটি ছিল। সেখান থেকে যুদ্ধ পরিচালনা
করা হতো। তারা আমাদের দেশের মানুষদের ওই সময় আশ্রয় দিয়েছে খাবার দিয়েছে।
ত্রিপুরা আমাদের শক্তি ছিল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এলপিজি গ্যাস আমাদের দেশে
উৎপন্ন হয় না। আমরা আমদানি করছি। রান্নায় সিলিন্ডারে সরবরাহ করছি। আগে
স্বল্প পরিমাণে আমাদের এলপিজি উৎপাদন হতো। আমদানিকৃত গ্যাস গ্রামে বিভিন্ন
কোম্পানি সরবরাহ করছে। আগে ১০ কেজির সিলিন্ডার ১৬শ টাকা দাম পড়তো। বাজার
উন্মুক্ত করে দেয়ায় এখন ৯শ টাকা। এখন অনুমোদিত ২৬টি কোম্পানি কাজ করছে।