ধর্ষণের শিকার এক কিশোরী আইনি সহায়তার জন্য গিয়েছিলেন এক আত্মীয়র কাছে।
ওই আত্মীয় তাকে আইনি সহায়তার পরিবর্তে উল্টো ধর্ষণ করে বিদায় করে দিয়েছেন
বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার পর ন্যায়বিচারের আশ্বাস দিয়ে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ
করেছেন অপর এক ব্যক্তি। ঢাকার ধামরাই উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে।
ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরী (১৫) স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির
ছাত্রী। তার বাবা অসুস্থ, কোনো কাজ করতে পারেন না। মা পোশাকশ্রমিক। এ ঘটনায়
কিশোরীর মা গত ২৫ সেপ্টেম্বর ধামরাই থানায় মামলা করেছেন।
মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ২৭ জুলাই ওই কিশোরীকে ধর্ষণ
করেন নাহিদ নামের এক তরুণ। এ ঘটনার পর কিশোরী তার ফুফা আলমগীর হোসেনকে
বিষয়টি জানায়। আলমগীর আইনি সহায়তা দেওয়ার কথা বলে গত ২০ আগস্ট নিজ বাড়িতে
নিয়ে তাকে ধর্ষণ করেন। আইনি সহায়তার পরিবর্তে পুনরায় ধর্ষণের শিকার মেয়েটি
তার মাকে সব খুলে বলে। পরে মেয়েটির মা গত ২৫ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত নাহিদ ও
আলমগীরের বিরুদ্ধে ধামরাই থানায় মামলা করেন। মামলার পর পুলিশ নাহিদকে
গ্রেপ্তার করে। নাহিদ বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
মেয়েটির মায়ের অভিযোগ, প্রথম ও দ্বিতীয় ঘটনায় থানায় মামলার পর শামীম খান
নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে তাঁদের পরিচয় হয়। তিনি একটি দৈনিক পত্রিকার
স্থানীয় সাংবাদিক বলে পরিয়চয় দেন। পরিচয়ের সূত্র ধরে গত বুধবার সকালে শামীম
খান একটি ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে তাঁদের বাড়ি যান। ন্যায়বিচারের স্বার্থে
একজন বিচারকের কাছে জবানবন্দি দেওয়ানোর কথা বলে তাঁর মেয়েকে বাড়ি থেকে নিয়ে
যান শামীম। এরপর মেয়েকে ধামরাইয়ের একটি রিসোর্টে নিয়ে ধর্ষণ করেন তিনি।
পরে মেয়েকে বাড়ির কাছে পৌঁছে দিয়ে শামীম পালিয়ে যান।
মেয়েটির মা বলেন, বাড়িতে এসে তার মেয়ে অনেকটা অস্বাভাবিক আচরণ করতে
থাকে। এতে সন্দেহ হলে জিজ্ঞাসার একপর্যায়ে সে সব খুলে বলে। পরে তার বোন
(মেয়েটির খালা) বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শামীম খানের বিরুদ্ধে ধামরাই থানায়
মামলা করেন।
ঘটনার পর থেকে শামীম খানের মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব
হয়নি। আজ শুক্রবার রিসোর্টে গিয়ে কোনো কর্মকর্তাকে পাওয়া যায়নি। তবে
নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীরা ধর্ষণের বিষয়ে কিছু জানেন না বলে উল্লেখ
করেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, গত বুধবার শামীম খান স্ত্রী
পরিচয়ে এক মেয়েকে নিয়ে রিসোর্টে কয়েক ঘণ্টা সময় কাটিয়েছেন বলে রিসোর্টের
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা প্রথম আলোকে
বলেন, প্রাথমিক তদন্তে কিশোরীকে আগের দুটি ঘটনাসহ সর্বশেষ শামীম খানের
বিরুদ্ধে ধর্ষণের ঘটনার আলামত পাওয়া গেছে। এসব ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিদের
গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।