গণপূর্ত অধিদপ্তরে টেন্ডারপ্রক্রিয়ায় প্রাক্কলন থেকে শুরু করে বাস্তবায়ন
পর্যন্ত প্রতিটি স্তরেই রয়েছে ব্যাপক দুর্নীতি। এসব দুর্নীতির সঙ্গে
ঠিকাদার আর কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশ রয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এক
প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
গণপূর্তে দুর্নীতির ১০টি ক্ষেত্র চিহ্নিত করেছে দুদক। একই সঙ্গে এসব
দুর্নীতি প্রতিরোধে ২০টি সুপারিশ তুলে ধরেছে সংস্থাটি। আজ বুধবার সচিবালয়ে
প্রতিবেদনটি গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের কাছে তুলে দেন দুদক
কমিশনার মোজাম্মেল হক খান।
সরকারি ২৫টি প্রতিষ্ঠানের বিদ্যমান আইন, বিধি, পরিচালনা পদ্ধতি, সরকারি
অর্থ আত্মসাৎ-অপচয়ের দিক পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক দল
গঠন করে দুদক। দলগুলোকে এসব প্রতিষ্ঠানের জনসেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে সফলতা ও
সীমাবদ্ধতা, আইনি জটিলতা, সেবাগ্রহীতাদের হয়রানি ও দুর্নীতির কারণ চিহ্নিত
করে তা বন্ধে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়।
কমিশনের নির্দেশনার আলোকে দুদকের দলগুলো প্রতিবেদন দাখিল করছে। ইতিমধ্যেই
স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বিমান, রাজউক, ওয়াসা, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষসহ
১৪ টি প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা নিয়ে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায়
গণপূর্ত নিয়ে এ প্রতিবেদন জমা দেওয়া হলো।
মোজাম্মেল হক খান বলেন, টেন্ডারপ্রক্রিয়ায় প্রাক্কলন থেকে শুরু করে
বাস্তবায়ন পর্যন্ত প্রতিটি স্তরেই নিবিড় মনিটরিংয়ের প্রয়োজন, কারণ এসব
ক্ষেত্রে দুর্নীতির ব্যাপকতা রয়েছে। এমনকি ইজিপি প্রক্রিয়ায়ও
ঠিকাদার-কর্মকর্তার যোগসাজশের ঘটনা ঘটছে। যেসব কর্মকর্তার নৈতিকতার বিষয়ে
বিতর্ক রয়েছে, তাঁদের বড় বড় প্রকল্পে নিয়োগ না দেওয়াই সমীচীন।
দুদক জানিয়েছে, গণপূর্ত অধিদপ্তরের আইন, বিধি, পরিচালনা পদ্ধতি, সরকারি
অর্থ অপচয়ের দিকগুলো পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করে প্রতিষ্ঠানটির সীমাবদ্ধতা,
প্রতিবন্ধকতা ও দুর্নীতি প্রতিরোধের জন্য সুপারিশ দিতে কমিশনের পরিচালক
সৈয়দ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে প্রাতিষ্ঠানিক দল গঠন করা হয়। এই দলে ছিলেন
একজন উপপরিচালক ও সহকারী পরিচালক। প্রাতিষ্ঠানিক দলটি তাদের অনুসন্ধানের
সময় গণপূর্ত অধিদপ্তরের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, বর্তমানে কর্মরত কর্মকর্তা
এবং এ বিষয়ে যাঁরা সম্যক ধারণা রাখেন, তাঁদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে তথ্য
সংগ্রহ ও পর্যালোচনা করে। এ ছাড়া গণপূর্ত অধিদপ্তরের বিভিন্ন অনিয়ম ও
দুর্নীতি–সম্পর্কিত বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যসহ ভুক্তভোগী
সেবাগ্রহীতাদের বক্তব্য, প্রতিষ্ঠানটির বার্ষিক বিবৃতি, নিরীক্ষা ও অডিট
প্রতিবেদনও পর্যালোচনা করে। সার্বিক পর্যালোচনার ভিত্তিতে প্রাতিষ্ঠানিক
দলটি গণপূর্ত অধিদপ্তরের দুর্নীতির উৎস ও ক্ষেত্র চিহ্নিত করে তা প্রতিরোধে
সুপারিশমালা প্রতিবেদন আকারে কমিশনে দাখিল করে।
দুর্নীতির উৎস
গণপূর্ত অধিদপ্তরের টেন্ডারপ্রক্রিয়ার বিভিন্ন স্তরে
দুর্নীতির তথ্যপ্রমাণ পেয়েছে। টেন্ডারে অতিরিক্ত ব্যয়ের প্রাক্কলন,
টেন্ডারের তথ্য ফাঁস, দর-কষাকষির নামে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে ঠিকাদার নিয়োগ,
বারবার নির্মাণকাজের নকশা পরিবর্তন, নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার,
টেন্ডারের শর্তানুসারে কাজ বুঝে না নেওয়া, কোনো কোনো ক্ষেত্রে মেরামত বা
সংস্কারকাজের নামে ভুয়া বিল–ভাউচার করে অর্থ আত্মসাৎ, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা
বা প্রভাবশালী ব্যক্তির বেনামে অথবা ঘনিষ্ঠ আত্মীয়স্বজনের মাধ্যমে ঠিকাদারি
কাজ পরিচালনা, প্রভাবশালী ব্যক্তিদের অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপ এবং ঠিকাদার ও
প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীর অনৈতিক সুবিধা গ্রহণকে
দুর্নীতির উৎস হিসেবে চিহ্নিত করেছে দুদক দল।
দুদক বলছে, এই সংস্থায় যথাযথ প্রক্রিয়ায় টেন্ডারপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করা
হয় না। অধিদপ্তরে বড় পরিসরের কাজ ছাড়াও মেরামত, সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ
খাতে কোটি কোটি টাকার বরাদ্দ রয়েছে। এ বরাদ্দের বিপরীতে কাজগুলো ছোট ছোট
লটে ভাগ করা হয়। এসব কাজ পছন্দের ঠিকাদারদের দেওয়ার জন্য ই-জিপিতে না গিয়ে
গোপন টেন্ডারের মাধ্যমে কাজ দেওয়া হয়। পছন্দের ঠিকাদারদের মধ্যে গণপূর্ত
অধিদপ্তরের অনেক কর্মকর্তার আত্মীয়স্বজন বা তাঁদের নামে-বেনামেও ঠিকাদারি
প্রতিষ্ঠান থাকার তথ্য পেয়েছে দুদক।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, অনেক ক্ষেত্রে ঠুনকো কারণে অপছন্দের ঠিকাদারকে
অযোগ্য (নন–রেসপনসিভ) করা হয় এবং কৌশলে পছন্দের ঠিকাদারকে যোগ্য (রেসপনসিভ)
করা হয়। এখন ই-জিপির মাধ্যমে টেন্ডার আহ্বান করা হলেও টেন্ডার দাখিলের
আগেই গোপন সমঝোতার মাধ্যমে পছন্দের ঠিকাদারকে মূল্য জানিয়ে দেওয়া হয়। এ
ছাড়া পছন্দের ঠিকাদারের যেসব অভিজ্ঞতা রয়েছে, সেসব অভিজ্ঞতার শর্ত জুড়ে
দেওয়া হয়, যাতে অন্য ঠিকাদার টেন্ডারে অংশ নিতে না পারেন।
ঠিকাদারের যোগসাজশে আত্মসাতের উদ্দেশ্যে বাজারদরের সঙ্গে সামঞ্জস্য না
রেখে নির্ধারিত দামের বাইরে গিয়েও অনেক ক্ষেত্রে প্রাক্কলন তৈরি করার তথ্য
পাওয়া গেছে।
বড় বড় প্রকল্প, বিশেষ করে ৩০ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে প্রকল্প প্রণয়নের
ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের দায়
এড়ানোর জন্য অনেক ক্ষেত্রেই ছোট ছোট প্যাকেজ করে প্রাক্কলন প্রণয়ন, অনুমোদন
ও ঠিকাদার নিয়োগ করা হয় বলে জেনেছে দুদক। উদাহরণ হিসেবে তারা বলছে, রূপপুর
পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন ছয়টি ভবনে
আসবাবপত্রসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজের জন্য দাপ্তরিক প্রাক্কলন প্রণয়ন করে
ছয়টি প্যাকেজে ই-জিপিতে দরপত্র আহ্বান করা হয়। প্যাকেজগুলোর প্রতিটির মূল্য
৩০ কোটি টাকার কম করা হয়। তাই মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়াই গণপূর্ত
অধিদপ্তর অনুমোদন ও ঠিকাদার নিয়োগ করে।
গণপূর্ত অধিদপ্তরের অধিকাংশ ক্ষেত্রে ই-জিপি টেন্ডারপ্রক্রিয়া অনুসরণ
করা হলেও টেন্ডারের শর্তানুসারে নমুনা অনুযায়ী কাজ বাস্তবায়ন না করে কোনো
কোনো ক্ষেত্রে প্রভাবশালী ঠিকাদারের চাপে অথবা একশ্রেণির
প্রকৌশলী-কর্মকর্তার যোগসাজশে প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করা হয়। ঠিকাদার
নির্বাচনের ক্ষেত্রে সিন্ডিকেট পদ্ধতি দীর্ঘদিন ধরে একটি প্রচলিত প্রথায়
পরিণত হয়েছে। কাজ পাওয়ার জন্য অনেক সময় বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তি,
পরামর্শক সংস্থা, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ঘুষ দিতে হয় বলেও প্রতিবেদনে
তুলে ধরা হয়।
নির্মাণকাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার একটি পুরোনো অভিযোগ। দুদকের
প্রতিবেদনেও এ তথ্য উঠে এসেছে। এতে বলা হয়, নির্মাণকাজে নিম্নমানের নির্মাণ
সামগ্রী, যেমন: ইট, রড, সিমেন্ট ও বালু ব্যবহারের অভিযোগ আছে। অনেক
ক্ষেত্রে যে অনুপাতে সিমেন্ট ও বালু মেশানোর কথা, তা না করে বালুর পরিমাণ
বেশি মেশানো হয়। যে নমুনা অনুযায়ী রড দেওয়ার কথা, তা না করে তা থেকে কম
পরিমাপের রড এবং যে ঘনত্বে রড দেওয়ার কথা, তা না করে রডের পরিমাণ কম দেওয়া
হয়। ঠিকাদার ও প্রকল্প–সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার যোগসাজশে এটা হয়।
প্রকল্প প্রণয়ন, তদারকি, বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কাজে ধীরগতির তথ্য তুলে
ধরেছে দুদক। তারা বলেছে, সরকারের ভবন নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন
কর্মকাণ্ডের পরিধি বহুগুণ বাড়লেও সে তুলনায় অধিদপ্তরের জনবলের আকার
আনুপাতিক হারে বাড়েনি।
দুদকের অনুসন্ধান বলছে, গণপূর্ত অধিদপ্তরের আওতাভুক্ত ভবন মেরামত,
সংস্কার ও সংরক্ষণের জন্য যে পরিমাণ বরাদ্দ প্রয়োজন, তার এক-তৃতীয়াংশ পাওয়া
যায় না। যথাসময়ে বরাদ্দ ছাড়ের অভাবে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ বিঘ্নিত হয়। ফলে,
রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চাহিদামতো করা সম্ভব হয় না।
প্রকল্পের ছক সংশোধন করে অনাবশ্যকভাবে প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি করার
অভিযোগও পেয়েছে দুদক। প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও আর্থিক লাভের আশায় ঠিকাদার ও
প্রকল্প–সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ব্যয় বাড়ানো হয়। পর্যাপ্ত
লোকবলের অভাবে স্থাপত্য অধিদপ্তর প্রায়ই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয়
নকশা সরবরাহ করতে পারে না। তাই প্রকল্প বাস্তবায়নে দেরি হয়।
যে সংস্থায় কাজ করা হবে, তাদের প্রয়োজনমতো জরুরিভাবে কাজ করে না
গণপূর্ত। আবার সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে গণপূর্তের বিভিন্ন স্তরের
কর্মকর্তা–কর্মচারীর অসহযোগিতার অভিযোগও পেয়েছে দুদক।
অনিয়মের আরেকটি বড় ক্ষেত্র বিল দেওয়ার বিষয়ে। অনেক সময় কাজ শেষে ঠিকাদার
বিল জমা দিলেও প্রকল্প–সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা নির্বাহী প্রকৌশলী নানা
অজুহাত দেখিয়ে বিল আটকে দেন। যেসব ঠিকাদারের সঙ্গে আর্থিক সমঝোতা হয়,
তাঁদের বিল আগে পরিশোধ করার তথ্যও পাওয়া গেছে। অনেক ক্ষেত্রে বরাদ্দ থাকা
সত্ত্বেও ঠিকাদারদের আংশিক বিল পরিশোধ করা হয়। এ ক্ষেত্রেও যেসব ঠিকাদারের
সঙ্গে আর্থিক সমঝোতা হয়, তাঁদের বিল আংশিক পরিশোধ না করে পুরোপুরিই পরিশোধ
করা হয়।
দুর্নীতি প্রতিরোধে সুপারিশ
এসব দুর্নীতি প্রতিরোধে ২০ দফা সুপারিশও তুলে ধরেছে দুদক।
দুদক বলেছে, গণপূর্ত অধিদপ্তরে ই-জিপি টেন্ডারপ্রক্রিয়া সার্বিকভাবে
বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। এ প্রক্রিয়ায় যাতে কোন দুর্নীতি বা জালিয়াতি না হয়,
সে জন্য ক্রয়কারী কার্যালয়ের প্রধানের দপ্তরে অভিজ্ঞ প্রকৌশলীদের নিয়ে
কারিগরি কমিটি গঠনের কথা বলেছে দুদক।
প্রকল্প নির্বাচন করার সময় ওই প্রকল্পের উপযোগিতা আছে কি না, তা গণপূর্ত
অধিদপ্তর ও চাহিদা প্রদানকারী সংস্থাকে নিশ্চিত করতে হবে। প্রকল্প
নির্বাচনের পর ড্রয়িং, ডিজাইন ও প্রাক্কলন গণপূর্ত অধিদপ্তর তৈরি করে তা
প্রত্যাশী সংস্থা থেকে অনুমোদন নেওয়া ব্যবস্থা নিলে ভালো হবে।
দুদকের মত হলো, প্রকল্প বাস্তবায়নে অহেতুক অযৌক্তিক সময় বাড়ানোর বিষয়টি
নজরদারির মধ্যে রাখতে হবে। চুক্তি স্বাক্ষর করার পর টেন্ডারমূল্য, মেয়াদকাল
ও চুক্তির অন্যান্য শর্ত সুনির্দিষ্ট বিধান ছাড়া পরিবর্তন করা উচিত নয় বলে
মনে করে দুদক। কোনো ঠিকাদার নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ করতে না পারলে
জরিমানার সুপারিশ করা হয়েছে।
কাজের গুণগতমান নিবিড় তদারকির জন্য দুই স্তরের মনিটরিং ব্যবস্থা চালুর কথা বলেছে দুদক।
গণপূর্ত অধিদপ্তরের যেসব কর্মকর্তা নামে-বেনামে ঠিকাদারি কাজের সঙ্গে
জড়িত, তাঁদের তালিকা তৈরি করে তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা
বলা হয়েছে প্রতিবেদনে। স্বার্থের দ্বন্দ্ব দূর করার জন্য এবং জাতীয়
শুদ্ধাচারের কৌশল হিসেবে কর্মকর্তাদের কাছ থেকে তাঁদের আত্মীয়স্বজন গণপূর্ত
অধিদপ্তরের ঠিকাদারি ব্যবসায় জড়িত আছেন কি না, তার সুস্পষ্ট অঙ্গীকারনামা
নেওয়ার কথাও বলেছে দুদক।
প্রকল্পের কেনাকাটা, নির্মাণ, মেরামত ও সংস্কারকাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি
নিশ্চিতের জন্য গণশুনানি ও সামাজিক নিরীক্ষা আয়োজনের কথা বলেছে।
সরকারের বড় নির্মাণ প্রকল্পের কাজে জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার
জন্য প্রাক্কলন তৈরির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বাস্তবায়ন কাজে জড়িত না করার
কথা বলেছে দুদক। নির্মাণকাজে গাফিলতি কিংবা এজেন্ট বা ঠিকাদার নিয়োগের
ক্ষেত্রে নীতিমালার না মানলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ও দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলীর
বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে দৃষ্টান্ত স্থাপনের কথা বলা
হয়েছে।
যেসব প্রকৌশলী কাজের পরিমাণগত ও গুণগতমান নিশ্চিত করে বুঝে নিতে পারেন
না বা ব্যর্থ হচ্ছেন, তাঁদের নির্মাণকাজের বাস্তবায়নসংক্রান্ত কাজে পদায়ন
না করার কথা বলেছে দুদক। তাঁদের বদলে যোগ্য এবং সাহসী কর্মকর্তাদের পদায়ন
করার কথা বলা হয়েছে। প্রকৌশলীদের পদায়ন ও বদলির স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার কথাও
বলা হয়েছে।
দুদকের প্রতিবেদন প্রসঙ্গে গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম
বলেন, ‘এই প্রতিবেদন আমাদের গাইডলাইন দেবে, যা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি
নিশ্চিতে কাজ করবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য
সহিষ্ণুতার নীতি অনুসরণ করছেন। আমি তাঁর মন্ত্রিসভার একজন সদস্য হিসেবে
দুর্নীতিকে ন্যূনতম সহ্য করব না। আমি তাঁর এই নীতিকে শতভাগ ধারণ করি এবং তা
বাস্তবায়নের জন্য নিবেদিত থাকব।’