যুদ্ধাপরাধী মামলায় গাইবান্ধা সদর উপজেলার মো. রনজু মিয়াসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে
রায় ঘোষণা করা হবে আগামীকাল মঙ্গলবার। বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে
তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই রায় ঘোষণা করবেন।
আজ
সোমবার ট্রাইব্যুনালের কার্যতালিকায় এ রায় ঘোষণার দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর আগে, গত ২১শে জুলাই মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান (সিএভি) রাখেন
ট্রাইব্যুনাল।
এ মামলায় ৬ জন আসামি ছিলেন। এর মধ্যে মো. রনজু মিয়া
(৫৯) গ্রেপ্তার আছেন। পলাতক রয়েছেন ৪ জন। তারা হলেন- আবদুল জব্বার মন্ডল,
তার ছেলে জাছিজার রহমান ওরফে খোকা (৬৪), মোন্তাজ আলী ব্যাপারি (৬৮) ও আবদুল
ওয়াহেদ মন্ডল (৬২)। আরেক আসামী আজগর হোসেন খান (৬৬) মারা গেছেন।
এই
ছয়জনের বিরুদ্ধে তদন্ত সম্পন্ন করে ২০১৬ সালের ২১শে ডিসেম্বর প্রতিবেদন
প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। আসামিদের
বিরুদ্ধে হত্যা, নির্যাতন, অগ্নিসংযোগসহ চারটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ
আনা হয়।
এদিকে ২৩শে ডিসেম্বর এক আসামি আজগর হোসেন খান মারা যাওয়ায় ৫ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন।
আসামিদের সবাই জামায়াতে ইসলামীর সক্রিয় কর্মী বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
আসামিদের
বিরুদ্ধে মোট চারটি অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রথম অভিযোগ হলো- একাত্তরে জুন
মাসের প্রথম দিকে রাজাকার আজগর হোসেন খানের নেতৃত্বে ৮-১০ জন রাজাকার এবং
১৫-২০ জন পাকিস্তান দখলকার সেনাবাহিনী গাইবান্ধা জেলার সদরের সাহাপাড়া
ইউনিয়নের বিঞ্চপুর গ্রামে হামলা করে। তারা অম্বিকা চরণ সরকার, দ্বিজেন
চন্দ্র সরকার ও আব্দুল মজিদ প্রধানকে নির্যাতন করে। আসামিরা ফুল কুমারী
রানী ও তার জা সাধনা রানী সরকারকে (বর্তমানে মৃত) আটক করে নির্যাতন করে।
তারা মুসলমান হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে কপালের সিঁদুর এবং হাতের শাখা ভেঙে
ছেড়ে দেয়।
দ্বিতীয় অভিযোগ হলো- গাইবান্ধা জেলার সদর থানাধীন
সাহাপাড়া ইউনিয়নের নান্দিনা গ্রামে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে আবু বক্কর, তারা
আকন্দ, আনছার আলী এবং নছিম উদ্দিন আকন্দসহ মোট ৯ জনকে গুলি করে হত্যা করে
এবং ৪০-৫০টি বাড়ির মালামাল লুণ্ঠন করে আগুনে পুড়িয়ে দেয়।
তৃতীয়
অভিযোগ- গাইবান্ধা জেলার সদর থানার সাহাপাড়া ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামে
সশস্ত্র হামলা চালিয়ে লাল মিয়া বেপারী, আবদুল বাকী এবং খলিলার রহমানসহ ৫
জনকে গুলি করে হত্যা করে। আর চতুর্থ অভিযোগ আনা হয়েছে, গাইবান্ধার সাহাপাড়া
ইউনিয়নের নান্দিনা, মিরপুর, সাহারবাজার, কাশদহ, বিসিক শিল্প নগরী,
ভবানীপুর এবং চকগায়েশপুর গ্রামে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে নিরস্ত্র
মুক্তিযোদ্ধা ওমর ফারুক, ইসলাম উদ্দিন এবং নবীর হোসেনসহ মোট ৭জনকে গুলি করে
হত্যা করা হয়।